মূলনিবাসী পার্টির বিশেষ সাধারণ সভা

মূলনিবাসী পার্টি অফ ইন্ডিয়ার বিশেষ সাধারণ সভা

Special general meeting of the Mulnibasi Party of India
মূলনিবাসী পার্টির বিশেষ সাধারণ সভা (বীরভূম)

Special general meeting of the Mulnibasi Party of India

গ্রামীণ বাংলা নিউজ, সোনারপুর :মূলনিবাসী পার্টি অফ ইন্ডিয়া’র বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গত ১৮ ই মে রবিবার সকাল ৯ টা থেকে ৩ পর্যন্ত। সভাটি অনুষ্ঠিত হয় সোনারপুর ‘মায়া ভবন’ সভাগৃহে। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন ‘মূলনিবাসী পার্টি অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা প্রাক্তন আইপিএস ডক্টর নজরুল ইসলাম বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বিশিষ্ট প্রতিনিধিগণ। বর্তমান রাজনৈতিক ও আর সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা হয় দীর্ঘ সময় ধরে।

এই সভায় ডক্টর নজরুল ইসলাম তাঁর সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বলেন “আমাদের মনে রাখতে হবে, পশ্চিমবাংলায় বর্তমানে গণতন্ত্র তলানিতে এসে ঠেকেছে। অর্থশক্তি এবং পেশিশক্তির কাছে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। নিজের ভোট তারা নিজেরাই দিতে পারছেন না ।”

গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে মূলনিবাসী পার্টি অফ ইন্ডিয়ার উদ্দেশ্যে এবং সমর্থকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি বুথে এজেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।” তাঁর মতে, যে সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের নির্বাচনের কাজে নিয়োগ করা হচ্ছে, তাঁরা নিরপেক্ষ থাকতে পারছেন না। একজনের ভোট আর একজন দিয়ে চলে যাচ্ছে। অথচ যাদের ভোট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁরা দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এমনকি অনেক সময় এই দুর্নীতির সঙ্গে তারা সহযোগিতা করছে। এটা গণতন্ত্রের লজ্জা! আমাদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এই সভায় অন্যান্যদের সঙ্গে বক্তব্য রাখেন এই দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পীযূষ গায়েন। জেলা প্রতিনিধিদের সামনে তিনি বলেন, “আমাদের এক একটি ভোটের মূল্য কোটি টাকা। অথচ সাধারণ মানুষের এ বিষয়ে কোন ধ্যান-ধারণা নেই। তারা অর্থশক্তির কাছে ২-৫ হাজার টাকায় বিকিয়ে যাচ্ছেন।” ভারতীয় রাজনীতির অভ্যন্তরে চলা রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে তিনি বলেন, “যাদের আমরা জনপ্রতিনিধি বানাচ্ছি, তারা আমাদের জনপ্রতিনিধি নয়, তারা আসলে শিল্পপতিদের প্রতিনিধি।

বর্তমানে দেশের শাসন ব্যবস্থার চরিত্র ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, আমাদের দেশে প্রকৃত অর্থে অর্থনৈতিক রাজতন্ত্র চলছে। তিনি আরও বলেন ‘শাসক’, ‘ক্ষমতা’ এগুলো আসলে ‘রাজতন্ত্রের শব্দ’। রাজনীতি, রাজধর্ম, রাজদণ্ড, শাসক, ক্ষমতা এগুলো রাজতন্ত্রের শব্দ । ‘গণতন্ত্রের শব্দ’ হল জনসেবা, জনসেবক, জনপ্রতিনিধি ( Public Service, Public Servant, Public Representatives). সবাই আগত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “জনগণকে এই বিষয়টি বেশি করে সচেতন করতে হবে !”

মানব সম্পদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কর্মসংস্থানের। আর সেটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কারণ, এটি রাষ্ট্রের উন্নতির জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন” —বলেন পীযূষ গায়েন। তিনি অভিযোগ করেন, এদেশের মিডিয়া আমাদের  ভুল জিনিস প্রতিদিন প্রচার করছে। আমাদের সামাজিক কাজ এবং রাজনৈতিক কাজকে আলাদা করে দেখানো হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, আমার অঞ্চলে স্কুল হবে, কলেজ হবে, হাসপাতাল হবে, জলের লাইন হবে, বেকারদের চাকরি দেওয়া হবে, রাস্তা হবে —এগুলো কি সামাজিক কাজ নয় ? এই কাজগুলো কে করতে পারে? পীযূষ বাবুর মতে, এগুলো একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিই করতে পারেন।

পীযূষবাবুর ব্যাখ্যায়, নির্বাচনী ব্যবস্থায় যোগদান হল সবচেয়ে বড় সামাজিক কাজ। জনগণ ঠিক করবে তার জনপ্রতিনিধি। আর জনগণই তার প্রচার করবে। ‘মূলনিবাসী পার্টি অফ ইন্ডিয়ানীতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি এভাবেই তাঁর মতামত ব্যক্ত করেন।
মূলনিবাসী পার্টির বিশেষ সাধারণ সভা
এছাড়া সবাই উপস্থিত অন্যান্য প্রতিনিধি তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, ড. কৌস্তব মণ্ডল, দ্বিপন মন্ডল, শংকর গায়েন, আলী হোসেন, রুপা সরদার, শেখ সিরাজুল- বীরভূম, শ্যামলাল- মালদা, সুনীল মণ্ডল -পূর্ব বর্ধমান শফিউদ্দিন -পূর্ব বর্ধমান, প্রফুল্ল কুমার মাঝি, নৃপেনদু নস্কর, তাপস কুমার গায়েন, শংকর কুমার নাইয়া প্রমূখ।

অন্যান্য আম্বেদকরবাদী দলের সঙ্গে তাঁরা সহযোগিতা করবে এবং সেই কারণে ইতিমধ্যে চারটি দল নিয়ে ‘মূলনিবাসী ফ্রন্ট’ তৈরি হয়েছে। জেলাগুলি স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাদের প্রার্থী ঠিক করবেন বলে জানান মূল্যবাসী পার্টির পক্ষ থেকে সাথি পীযূষ কান্তি গায়েন উল্লেখ করেন।

সভায় শঙ্কর নাইয়া অসাধারণ গান করেন।

ডক্টর কৌস্তভ মন্ডল সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সবার কাজ সমাপ্ত করেন ।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

Facebook