পেনশনের হিসাব কীভাবে করা হয়?

পেনশনের হিসাব কীভাবে করা হয়?

আমরা বর্তমানে যাঁরা কর্মরত অবস্থায় আছি, অথবা কেউ হয়তো রিটায়ারমেন্টের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছি। কিন্তু আমরা কি জানি, রিটায়ার করার পর আমরা কত-কী পেনশন পাবো?
আসুন, এ বিষয়ে সম্যক ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করি। যাতে অফিস কোন রকম ভুল করলেও আমরা সেটা ধরতে পারি।

  1. পুরনো নিয়মে যারা পেনশন পাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে হিসাবটা আলাদা ছিল:-বর্তমানে তারাও বর্ধিত হারে পেনশন পাবেন বা পাচ্ছেন।
  2. আর নতুন নিয়মে যারা পেনশন পাবেন রোপা ২০০৯ ও ২০১৯ অনুযায়ী তাদের ক্ষেত্রে হিসাবটা একটু আলাদা হবে।

পুরানো নিয়মের হিসাব :

পুরোনো নিয়মে যাদের পেনশন শুরু হয়েছিল তাদের হিসাবটা নিম্নরূপ:-
পেনশন=(লাস্ট বেসিক পে × কোয়ালিফাইং সার্ভিস × 50)÷3300 এই নিয়মে।

একটা উদাহরণ দেওয়া যাক :

🛑 ধরুন পুরনো হারে যখন কেউ রিটায়ার করেছেন তিনি ৩৩ বছর সার্ভিস করেছেন এবং ওনার লাস্ট বেসিক পে ছিল ৫০০০ টাকা।

তাহলে তিনি যত টাকা পেনশন পাচ্ছেন?
পেনশন :
=(৫০০০×৩৩×৫০)÷৩৩০০
=৮২৫০০০০÷৩৩০০
=২৫০০/-অর্থাৎ ফুল পেনশন পাচ্ছেন।

অর্থাৎ পুরোনো নিয়মে ৩৩ বছর চাকরি করলে তবেই ফুল পেনশন পাওয়া যেত!

নতুন নিয়মের হিসাব :

ধরুন নতুন নিয়মে কেউ রিটায়ার করলেন তাহলে তিনি কত পেনশন পেতে পারেন?
নতুন নিয়মে বলা হয়েছে :
  1. মিনিমাম ২০ বছর চাকরি করলে ফুল পেনশন পাওয়া যাবে।
  2. আর ১০ বছরের কম সার্ভিস পিরিয়ড হলে পেনশন পাওয়া যাবে না।

একটা উদাহরণ দেওয়া যাক :

🛑ধরুন কোন এমপ্লয়ীর লাস্ট বেসিক পে ৬০০০০/- হাজার টাকা,, তিনি চাকরি করেছেন ১৭ বছর ৫ মাস তাহলে তিনি কত পেনশন পাবেন ?

এখানে তিনি যে ১৭ বছর ৫ মাস চাকরি করেছেন এটাকে ইউনিট অফ সার্ভিস ধরলে হবে ৩৫ ইউনিট।
📍পূর্বে এক বছরকে ২ ইউনিটে ভাগ করা হতো ৬ মাস করে ধরে।
📍এখন বছরের ৩ মাস পর্যন্ত ১ ইউনিট এবং ৯ মাস হয়ে গেলে ২ ইউনিট ধরা হয়।
📍তাই উনার ইউনিট অফ সার্ভিস হচ্ছে (১৭×২)+১= ৩৫

নতুন নিয়মে পেনশনের ফর্মুলা :

পেনশন =(লাস্ট বেসিক পে × ইউনিট অফ সার্ভিস)÷৮০
পেনশন :
=(লাস্ট বেসিক পে × ইউনিট অফ সার্ভিস)÷৮০
=(৬০০০০×৩৫)÷৮০
=২১০০০০০÷৮০
=২৬২৫০/-প্রতিমাস।

(এর সঙ্গে যোগ হবে বর্তমানের ৩%D.A সেটা এবং ৫০০ টাকা মেডিকেল অ্যালাউন্স।
অর্থাৎ তিনি প্রতি মাসে বর্তমানে ২৭৫৩৮/-টাকা করে পেনশন পাবেন।

নতুন নিয়মের ফুল পেনশন :

🛑এখানে তিনি যদি ২০ বছর বা তার বেশি চাকরি করতেন তাহলে ফুল পেনশন পেতেন।
সেক্ষেত্রে ইউনিট অফ সার্ভিসটাকে ৪০ ধরে হিসাব করতে হবে। অর্থাৎ ফুল পেনশনের জন্য ম্যাক্সিমাম ইউনিট অফ সার্ভিস ৪০ হবে।
কেউ যদি ২০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্তও চাকরি করেন, তবুও তাঁর ইউনিট অফ সার্ভিস (UNIT OF SERVICE) ৪০ ই ধরা হবে।
ফুল পেনশন :
=(লাস্ট বেসিক পে × ইউনিট অফ সার্ভিস)÷৮০
=(৬০০০০×৪০)÷৮০
=২৪০০০০০÷৮০
=৩০০০০/-প্রতিমাসে পেনশন পাবেন।
(এর সঙ্গে বর্তমানের ৩% D.A,, সেটা এবং ৫০০ টাকা মেডিক্যাল অ্যালাউন্স যোগ হবে)
অর্থাৎ ৩০০০০+৯০০+৫০০=৩১৪০০/- প্রতি মাসে.

🛑 যেহেতু প্রত্যেক এমপ্লয়ীর সার্ভিস লেন্থ (চাকরির মোট সময়কাল) আলাদা, তাই প্রত্যেকের পেনশন অ্যামাউন্ট এর পরিমাণও আলাদা আলাদা হবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য :

অনেকেই জানতে চান যে, বর্তমানে যাঁরা চাকরি পাচ্ছেন তারা কি পেনশন পাবেন? তাঁদের উদ্দেশ্যে বলে রাখি, এখনও পর্যন্ত যেহেতু কর্তৃপক্ষ কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশিকা বের করেনি,, তাই ধরে নেওয়া যায় প্রত্যেকেই পেনশন পাওয়ার যোগ্য।
--------xx-------

মন্তব্যসমূহ

রাজ্য, দেশ ও আন্তর্জাতিক খবর

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ