শিশুসাহিত্যিক দীপ মুখোপাধ্যায় প্রয়াত

কবি-শিশুসাহিত্যিক দীপ মুখোপাধ্যায় প্রয়াত

সৈয়দ হাসমত জালাল

কবি ও শিশুসাহিত্যিক দীপ মুখোপাধ্যায় প্রয়াত

কবি ও শিশুসাহিত্যিক দীপ মুখোপাধ্যায় ১০ সেপ্টেম্বর, রবিবার ভোরে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি রেখে গেছেন তাঁর স্ত্রী শুভ্রা মুখোপাধ্যায়কে। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

ছাত্রাবস্থায় দীপ মুখোপাধ্যায়ের শৈশব-কৈশোর কেটেছিল পুরুলিয়ার রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠে। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানির মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক।

সত্তরের দশক থেকে তাঁর লেখালেখি শুরু। মূলত ছড়া লেখার জন্যই তাঁর পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা। তবে শুরুর দিকে তিনি কবিতাও লিখতেন। পাশাপাশি লিখেছেন গল্প ও উপন্যাস। এবছরই তাঁর চারটি কিশোর উপন্যাসের সংকলন 'চাট্টিখানি'-র জন্য পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 'উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী পুরস্কার'। তাঁর ছড়ায় ছন্দের সঙ্গে অন্ত্যমিল ও রসবোধের মিশ্রণ পাঠকদের মন জয় করে নিত। তবে 'ছড়াকার' শব্দটিতে আপত্তি ছিল তাঁর।

প্রায় চল্লিশ বছর ধরে দীপের সঙ্গে আমার পরিচয় ও জানাশোনা। ব্যক্তিগত কথাবার্তার মধ্যেও তাঁর রসবোধের প্রকাশ ঘটত সবসময়। কবি-লেখকদের অনেকের সঙ্গেই ছিল তাঁর মধুর সম্পর্ক। পেঁচার মূর্তি সংগ্রহ করতে ভালোবাসতেন দীপ। তাঁর সংগ্রহে ছিল অসংখ্য ধরনের পেঁচার মূর্তি।

কিছুটা বেহিসেবি জীবনযাপন করতে ভালোবাসতেন। তবে অন্যের সঙ্গে ব্যবহারে তাঁর সৌজন্য বা আন্তরিকতার ঘাটতি থাকত না।

চিকিৎসার ফলে সম্প্রতি অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে আমাকে জানিয়েছিলেন দীপ। গত জুলাই মাসে সুনির্মল বসুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়েছিল। সেদিন তাঁর হাতে স্মারক ও উপহার তুলে দিয়েছিলাম।

তাঁর মৃত্যুতে সাহিত্যমহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাংলাদেশেও তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সেখানকার কবি-লেখকরাও।