সর্বশেষ গুরুত্বপুর্ণ খবর

হাজারও কবিতানুরাগীদের বেদনাহত করে চিরবিদায় নিলেন কবি নাসের হোসেন।

নাসের হোসেন। কবিতা লিখছেন 'বাংলা সাহিত্য'-এর জন্য। পত্রিকা দপ্তরে।

আলী হোসেন, কলকাতা : আশি দশকের অন্যতম প্রধান কবি নাসের হোসেন। হাজারও কবিতানুরাগীদের বেদনাহত করে চিরবিদায় নিলেন আজ সকালে । তাঁর জন্ম পঞ্চাশ দশকের দ্বিতীয় অর্ধে। কলকাতায়। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে বহরমপুরে। ১৯৭০ সালে সমবর্ত নামে একটি স্থনীয় পত্রিকায় ছাত্রাবস্থায় প্রথম কবিতা বের হয় তাঁর। প্রথম যৌথ চিত্রপ্রদর্শনী হয় ১৯৭৪ কৃষ্ণনাথ কলেজ, বহরমপুরে।

কর্মর্সূত্রে কলকাতায় আসেন ১৯৮১ সালে। এখানে আসার পর তাঁর সাহিত্য জীবন আরও গতি পায়। তাঁর প্রকাশিত মোট কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ২১ এবং মোট গ্রন্থের সংখ্যা ২৬। প্রথম একক চিত্রপদর্শনী ১৯৮৪ বিড়লা একাডেমি, কলকাতায়। পত্রিকা সম্পাদনা সহযোগী হিসাবে কাজ করেছেন রৌঁরব (১৯৭৫-২০০৪) পত্রিকায়। এছাড়া কবিতা পাক্ষিকের চার বছর প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এখনও পত্রিকাটি নিয়মিতভাবে প্রতি চৌদ্দদিন পর পর বেরোয়। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি এই পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। 

'বাংলা সাহিত্য' অনলাইন ম্যাগাজিনের কবিতার পাতার অন্যতম প্রধান সহযোগী সম্পাদক ছিলেন এর জন্মলগ্ন থেকেই। এই ম্যাগাজিনের বর্তমান সংখ্যাটি (অক্টোবর - ২০২০) তাঁকে প্রচ্ছদে রেখে শুরু করেছে নতুন আঙ্গিকে (পডকাস্ট সম্প্রচার) পথচলা। এখন থেকে পাঠক কবিতা, গল্পসহ অন্যান্য লেখা পড়ার সাথে সাথে লেখকের নিজের কন্ঠে পাঠও শুনতে পাবেন। কবি নাসের হোসেন এই সংখ্যায় আমন্ত্রিত কবি হিসাবে দুটি কবিতা লিখেছেন এবং সকন্ঠে পাঠ করেছেন পাঠকদের জন্য। আপনিও চাইলে শুনতে পারেন কবি কন্ঠে কবিতা পাঠ, বাংলা সাহিত্যের কবিতার পাতায়। শুনতে চাইলে ক্লিক করুন এখানে। 

অর্জুন মিশ্র এই ছদ্মনামে কবিতা পাক্ষিক-এ কবিতা সংবাদ ও শিল্পসাহিত্য সংবাদ গদ্য রচনা করেছেন। কবিতালেখার পাশাপাশি কবিতা চিত্রভাস্কর্য নিয়ে গদ্য লিখছেন অনেক । অনুবাদ ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেছেন ২০০৪ আলিয়ঁস ফ্রঁসে। ২০০৮ ম্যাক্সমূলার ভবন ও সাহিত্য অকাদেশির প্রয়াসে সম্মানিত আমন্ত্রিত সদস্য হয়েছেন। ২০০৮ থেকে সাহিত্য অকাদেশি (নিউ দিল্লি) অ্যাডভাইসরি বোর্ডের সম্মানিত আমন্ত্রিত সদস্য হয়ে আছেন। 

১৯৯৮ কলকাতা বইমেলায় মহাশ্বেতা দেবীর হাত থেকে কবি অনন্য রায় পুরস্কার গ্রহণ করেন । ২০০৬ সালে পেয়েছেন কবি আশেক মহান্তী পুরস্কার। ২০০৭ ‘মনীষা’ পত্রিকা প্রদত্ত সম্মাননা। ২০০৭ সালে মনীষা পত্রিকা সম্মাননা জানান। ১৯৯৪ সালে ভারতবর্ষ কবিতাটি ইউনেস্কা-র সংকলনে প্রকাশ পায়। এছাড়া আরো অনেক সম্মাননা তাঁর জীবনকে আচ্ছাদিত করেছে। তাঁর লেখা ফরাসি, স্প্যানিশ প্রভৃতি কিছু ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

তাঁর অকাল প্রয়াণে বাংলা সাহিত্য তথা বাংলা উত্তরাধুনিক কবিতা ধারার অপূরণীয় ক্ষতি হলো বলে মনে করছেন সাহিত্যানুরাগী মানুষজন।

Comments

Post a Comment